শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৭

সফল নেতা হওয়ার সাত ৭ উপায়।

সফল নেতা

১। রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করুন নিজেকে

শুরু থেকে এ পর্যন্ত আসতে আপনার সব শ্রম, মেধা আর স্যাক্রিফাইস টিমের অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন। প্রফেশনালিজম বজায় রেখে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখুন। টিমের অন্যদের অর্জনে শুভেচ্ছা জানান ব্যক্তিগতভাবে। অন্যদের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গিই আপনার প্রতি তাদের আস্থা অর্জনে সাহায্য করবে।


২। নিয়মকানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন
শুধু অন্যদের জন্য নিয়মকানুন তৈরি করেই ক্ষান্ত হবেন না। এর পেছনের কারণগুলো তুলে ধরুন সবার কাছে। নিয়মকানুনের প্রতি অন্যদের সম্মান তখনই আশা করতে পারেন যখন আপনিও সে নিয়মকানুনের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল হবেন।


৩। সিদ্ধান্ত গ্রহণে কৌশলী হোন
যদিও নেতা হিসেবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আপনারই, তারপরও কখনও কখনও এ সিদ্ধান্ত গ্রহণে একটু ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করুন। আলোচনাসাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন, সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্তের ওপর সবার মতামত চান। এতে টিমের অন্যরা ভাববে না_ আপনি সবসময় সিদ্ধান্ত অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেন।
৪। কাজের স্বীকৃতি দিন
আপনি যেমন আপনার কাজের প্রশংসা বা স্বীকৃতি পেতে ভালোবাসেন, তেমনি ভালোবাসেন অন্যরাও। তাই সবসময় টিমের সদস্যদের ভুল না ধরে, তাদের কাজের প্রশংসাও করুন। পুরস্কৃত করুন তাদের সাফল্যে।


৫। হাল ছাড়বেন না মাঝপথে

কোনো কাজে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়া, আপনার ব্যাপারে একটা খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে অন্যদের জন্য। প্রয়োজনে কৌশল বদলান, কিন্তু লক্ষ্য নয়। হতাশা নয়; টিমের সদস্যদের আশার কথা শুনিয়ে উৎসাহিত করুন।


৬। স্বপ্ন দেখুন লক্ষ্যে পৌছার

টিমের সদস্যদের সামনে লক্ষ্যটার কতটা স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি তুলে ধরতে পেরেছেন তার ওপর নির্ভর করছে আপনার টিমের সাফল্য। আর আপনি তখনই অন্যদের সামনে স্বচ্ছ লক্ষ্য তুলে ধরতে পারবেন যখন আপনি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করবেন যে সে লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব।


৭। ভুল স্বীকারে অকপট হোন

কোনো মানুষই পারফেক্ট নয়। তাই নিজের ভুল হলে সেটা অকপটে স্বীকার করুন। টিমের অন্যদের কাছ থেকেও আপনার কিছু না কিছু শেখার থাকতে পারে কাজ করুন এটা মেনে নিয়ে।


ধনী হওয়ার সহজ উপায়।



ধনী

১)  সহজ শব্দের ব্যবহার করুনঃ 
সব সময় সহজ শব্দের ব্যবহার করতে শিখুন। কোটিপতিরা সবসময় সহজ শব্দই ব্যবহার করেন। তারা জানেন কিভাবে বার্তা সহজভাবে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হয়। তাদের প্রখর ব্যক্তিত্বের কারণে তারা অল্প কথায় নিজের বার্তা অন্যের মাঝে পৌছে দিতে সক্ষম।

যদিও এই দক্ষতার অনেকটাই নির্ভর করে আপনার যোগাযোগ দক্ষতার উপর। আপনি যদি যোগাযোগে দ্ক্ষ না হন তবে আপনার পক্ষে সহজ শব্দের ব্যবহারে অন্যের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হবে না।

এই জন্য নিজের শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আপনার শব্দভাণ্ডার যতবেশি সমৃদ্ধ হবে আপনার যোগাযোগ দক্ষতা তত বৃদ্ধি পাবে। আপনার শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ হলে আপনি কোটিপতি হওয়ার পথে প্রথম ধাপ অতিক্রম করবেন।

২)  পুরাতন ধ্যান-ধারণা পরিত্যাগ করুনঃ 
নতুন কিছুর মুখোমুখি হওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই পুরাতনকে ত্যাগ করতে হবে। যেমন আপনি যদি একটা নতুন গাড়ি বা বাড়ি চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পুরাতনটাকে ত্যাগ করতে হবে। আপনি যদি পজেটিভ কিছু গ্রহণ করতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই নেগেটিভকে ত্যাগ করতে হবে। যখন আপনি আপনার নেগেটিভ অভ্যাস ত্যাগ করবেন তখনই পজেটিভ অভ্যাসগুলো সেই স্থানগুলো দখল করবে। পুরাতন ধ্যান-ধারণা পরিত্যাগ করে নতুন কিছু ধারণ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

৩)  প্রতিদিনের লক্ষ্য নির্ধারণ করুনঃ
একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রতিদিনের কার্যক্রম শুরু করুন। এটা আপনাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণীত করবে। আপনার লক্ষ্যে পৌছানো সহজ করে দেবে এই ছোট্ট একটা অভ্যাস।

৪)   নিজেকে ধন্যবাদ দিনঃ
আপনি অবশ্যই জানেন আপনি কি করতে যাচ্ছেন। আপনার প্রতিদিনের লক্ষ্য অর্জিত হলে নিজেকে ছোট্ট একটা ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। এভাবে নিজেকে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ধন্যবাদ দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে পরের দিনের কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ অনেক বেড়ে যাবে।

৫)  নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করুনঃ
আপনি যত বেশি বেশি পরিকল্পনা নিয়ে এগুবেন, ততবেশি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষমতা আপনার মাঝে সৃষ্টি হবে। বেশি বেশি পরিকল্পনা নেওয়া এবং সেটা বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা আপনাকে মিলেনিয়ার হওয়ার পথে কয়েকধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

৬)  নিজেকে প্রশ্ন করুনঃ
নিজের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন। অধিকাংশ মানুষই নিজের এই ক্ষমতা সম্পর্কে জানেনা। নিজেকে প্রশ্ন করার মাধ্যমে আপনি যত সহজে কোন সমস্যার সঠিক সমাধান পাবেন অন্যের কাছে সেটা পাবেন না।মিলেনিয়ার হতে আপনাকে অবশ্যই এই ক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

৭)  দক্ষ হয়ে উঠুনঃ
আপনি যে কাজই করেন না কেন সেটাতে আপনাকে মাস্টার হতে হবে। আপনি নিজেই যদি আপনার কাজ সঠিকভাবে না বুঝেন তাহলে সে কাজে আপনার পক্ষে সফল হওয়া সম্ভব নয়।

৮)  নিজের প্রতি যত্নবান হউনঃ
আপনার চেহারা এবং পোষাকে চমৎকারিত্ব ধরে রাখুন। নিজের প্রতি যত্নবান হউন। সফল হতে হলে নিজেকে অবশ্যই সুন্দর ও সতেজ রাখতে হবে।চমৎকার চেহারা ও মার্জিত পোষাক আপনার ব্যক্তিত্ব তৈরীতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে।মিলেনিয়ার হওয়ার ক্ষেত্রে যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৯)  কাজের জন্য সর্বাত্নক প্রচেষ্টা চালানঃ
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আপনি সহজেই ধনী হতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে কাজের সময় বাড়াতে হবে। কাজই এনে দেবে আপনার সাফল্য। এ জন্য প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো টাকা উপার্জন বাড়ানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আর এতে যে পথগুলো সফল হবে সে পথে উপার্জন বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করতে হবে।

১০)  সফল ব্যক্তিদের জীবনী সম্পর্কে জানুনঃ
মিলেনিয়ার হওয়ার জন্য আপনাকে অন্য যারা সফল হয়েছে তাদের সম্পর্কে জানতে হবে। তারা কিভাবে সফল হয়েছে সেটা বুঝতে হবে।

গরীব হইবার সামর্থ্য


অনেকের গরীব-মানুষি করিবার সামর্থ্য নাই। এত তাহাদের টাকা নাই যে, গরীব-মানুষি করিয়া উঠিতে পারে। আমার মনের এক সাধ আছে যে, এত বড়ো মানুষ হইতে পারি যে, অসংকোচে গরীব- মানুষি করিয়া লইতে পারি! এখনো এত গরীব মানুষ আছি যে গিল্টি করা বোতাম পরিতে হয়, কবে এত টাকা হইবে যে সত্যকার পিতলের বোতাম পরিতে সাহস হইবে! এখনো আমার রূপার এত অভাব যে অন্যের সমুখে রূপার থালায় ভাত না খাইলে লজ্জায় মরিয়া যাইতে হয়। এখনো আমার স্ত্রী কোথাও নিমন্ত্রণ খাইতে গেলে তাহার গায়ে আমার জমিদারীর অর্ধেক আয় বাঁধিয়া দিতে হয়! আমার বিশ্বাস ছিল রাজশ্রী ক বাহাদুর খুব বড়ো-মানুষ লোক। সে দিন তাঁহার বাড়িতে গিয়াছিলাম, দেখিলাম তিনি নিজে গদীর উপরে বসেন ও অভ্যাগতদিগকে নীচে বসান, তখন জানিতে পারিলাম যে তাঁহার গরীব-মানুষি করিবার মত সম্পত্তি নাই। এখন আমাকে যেই বলে যে, ক রায়-বাহাদুর মস্ত বড়োমানুষ লোক, আমি তাহাকেই বলি,”সে কেমন করিয়া হইবে? তাহা হইলে তিনি গদীর উপর বসেন কেন?” উপার্জন করিতে করিতে বুড়া হইয়া গেলাম, অনেক টাকা করিয়াছি, কিন্তু এখনো এত বড়োমানুষ হইতে পারিলাম না যে আমি বড়োমানুষ এ কথা একেবারে ভুলিয়া যাইতে পারিলাম। সর্বদাই মনে হয় আমি বড়োমানুষ। কাজেই আংটি পরিতে হয়, কেহ যদি আমাকে রাজাবাহাদুর না বলিয়া বাবু বলে, তবেই চোখ রাঙাইয়া উঠিতে হয়। যে ব্যক্তি অতি সহজে খাবার হজম করিয়া ফেলিতে পারে, যাহার জীর্ণ খাদ্য অতি নিঃশব্দে নিরুপদ্রবে শরীরের রক্ত নির্মাণ করে, সে ব্যক্তির চব্বিশ ঘণ্টা ‘আহার করিয়াছি’ বলিয়া একটা চেতনা থাকে না। কিন্তু যে হজম করিতে পারে না, যাহার পেট ভার হইয়া থাকে, পেট কামড়াইতে থাকে, সে প্রতি মুহূর্ত্তে জানিতে পারে যে, হাঁ, আহার করিয়াছি বটে। অনেকের টাকা আছে বটে, কিন্তু নিঃশব্দে টাকা হজম করিতে পারে না, পরিপাকশক্তি নাই— ইহাদের কি আর বড়োমানুষ বলে! ইহাদের বড়োমানুষি করিবার প্রতিভা নাই। ইহারা ঘরে ছবি টাঙায় পরকে দেখাইবার জন্য; শিল্পসৌন্দর্য উপভোগ করিবার ক্ষমতা নাই, এই জন্য ঘরটাকে একেবারে ছবির দোকান করিয়া তুলে। ইহারা গণ্ডা গণ্ডা গাহিয়ে বাজিয়ে নিযুক্ত রাখে, পাড়াপ্রতিবেশীদের কানে তালা লাগাইয়া দেয়, অথচ যথার্থ গান বাজনা উপভোগ করিবার ক্ষমতা নাই। এই সকল চিনির বলদদিগকে প্রকৃতি গরীব মনুষ্য করিয়া গড়িয়াছেন। কেবল কতকগুলা জমিদারী ও টাকার থলিতে বেচারাদিগকে বড়োমানুষ করিবে কি করিয়া?


দুশ্চিন্তা নিবারন।

দুশ্চিন্তা


যখন দুশ্চিন্তা আপনাকে সম্পূর্ণভাবে গ্রাস করে ফেলে একবার নিজে শান্ত হয়ে বসে ভাবুন আপনার দুশ্চিন্তা মূলত কি নিয়ে। একবার যদি দুশ্চিন্তার জুতসই কোন কারণ খুঁজে বের করতে সক্ষম হন তাহলে দেখবেন দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে আসবে।
খুব বেশী দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হলে ভাবুন যে দুশ্চিন্তা করার ফলে আপনি কি কোন সমাধানে আসতে পারছেন? নাকি আপনার দুশ্চিন্তা করার এই অভ্যাসের কারণে নিজে আরও বেশী হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন? মনে রাখুন দুশ্চিন্তা করা কোন সমস্যার সমাধান নয়। এটা মেনে নিন দেখবেন দুশ্চিন্তা আপনাকে আগ্রাসন করতে পারবে না।
দুশ্চিন্তা করার আরেকটি অর্থ হল নিজের সময় অপচয় করা। আপনি আপনার জীবনের সমগ্র সময় থেকে যে সময়গুলো শুধুমাত্র দুশ্চিন্তা করে কাটিয়েছেন সেই সময়গুলো কেবল অপচয় হয়েছে মাত্র। এই কথাটা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে শিখুন। আপনার এই বিশ্বাস আপনাকে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে।
দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষেরা নিজেদের একা রাখতে পছন্দ করে। যেটা সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত। আপনি যদি কোন ব্যাপারে দুশ্চিন্তার শিকার হয়ে থাকেন, তাহলে সেটা নিজের মধ্যে চেপে না রেখে আপনার বিশ্বস্ত মানুষের সাথে আলোচনা করুন। দেখবেন আপনার দুশ্চিন্তা অনেকটা কমে যাবে।
যে ব্যাপারটা আপনাকে বার বার দুশ্চিন্তা করতে বাধ্য করবে সেটা আপাতত এড়িয়ে যেতে নিজেকে কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখুন। এক কথায় আপনার মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিন। মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার ফলে একটা সময় আপনার দুশ্চিন্তার কারণ তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে।
যেকোন মানসিক অস্থিরতা (emotional instability) থেকে নিজেকে দূরে রাখতে মেডিটেশন (meditation) এর তুলনা হয়না। যখনই আপনি নিজেকে দুশ্চিন্তার কবলে পড়তে দেখবেন আপনি নিজেকে মেডিটেশনের জন্য প্রস্তুত করতে থাকুন। প্রায় নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যাই যে মেডিটেশন আপনাকে সকল চিন্তা বা দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা করবে।01689752548
শারীরিক কসরত (physical exercise) করার মাধ্যমেও দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায়। আপনার মন দুশ্চিন্তা গ্রস্থ হয়ে উঠলে সামান্য কিছু ব্যায়াম করুন। দেখবেন দুশ্চিন্তা হতাশা গ্লানি সবটা কেমন কমে আসছে।
পরিবারের মানুষগুলোর সাথে কিছু ভালো মুহূর্ত কাটাতে পারেন। আপনার সঙ্গীকে নিয়ে কিছু একান্ত সময় উপভোগ করতে পারেন অথবা পরিবারের ছোট সদস্যদের সাথে মেতে উঠতে পারেন হাঁসি আনন্দে। উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা কমাতে এগুলোর বিকল্প হয়না।
দুশ্চিন্তা কমাতে আপনার দুচোখ বন্ধ করে বুক ভরে শ্বাস নিন আর শ্বাস ছাড়ুন। এতে করে আপনার শরীরে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যাবে আর আপনার স্নায়ু শান্ত হয়ে আসবে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আপনার মাংসপেশি শিথিল হয়ে আপনার দুশ্চিন্তাগ্রস্থতা কমে যাবে।

হার্ট অ্যাটাক কি ও কেন হয় ? এবং এর প্রতিকার জেনে রাখুন কাজে লাগবে।

আশা করি সবাই ভাল আছেন।
আজকে হার্ট অ্যাটাক নিয়ে বলা হল। এটা একটা বড় সমস্যা। আশা করি এতে সবার এ বিষয়ে একটু ধারনা হবে।
হার্ট অ্যাটাক

  • হার্ট অ্যাটাক কি?
মূল কথা হার্ট অ্যাটাক হল হার্ট ঠিক মত কাজ না করা। করোনারি আর্টারি নামে হৃৎপিন্ডের গায়ে থাকে দুটি ছোট ধমনী। এরাই হৃৎপিন্ডে পুষ্টির যোগান দেয়। কোন কারনে এই করোনারি আর্টারিতে যদি ব্লক সৃষ্টি হয় তাহলে যে এলাকা ঐ আর্টারি বা ধমনীর রক্তের পুষ্টি নিয়ে চলে সে জায়গার হৃৎপেশি কাজ করে না। তখনই হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। এর কেতাবি নাম মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন।
হার্ট অ্যাটাক বুকে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভূত হয়। এই ব্যাথা ২০-৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগী হাসপাতালে পৌছার আগেই মৃত্যুবরন করে।তাই এটি একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি।
  • হার্ট অ্যাটাক কখন হয়?
আমরা ভাবি মানুষ বুড়ো হলে ,মোটা হলে বা টেনশন করলে হার্ট অ্যাটাক হয়। কিন্তু এটা ভুল যে কোন সময় হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে।
যেমনঃ
  • ঘুমের সময় হতে পারে
  • বিশ্রামের সময় হতে পারে
  • হঠাৎ ভারী কায়িক শ্রমের পর হতে পারে
  • বাইরে ঠান্ডা আবহাওয়ায় বেরুলেন, তখন হতে পারে
  • ইমোশনাল স্ট্রেসের জন্য হতে পারে
  • হার্ট অ্যাটাক এর কারন কি?
হৃদরোগের অনেক কারন আছে। প্রাথমিক জ্ঞানের জন্য আমরা এখানে প্রধান কারনগুলো উল্লেখ করবোঃ
1. তেলযুক্ত খাদ্য গ্রহন।
2. মানসিক চাপের মধ্যে থাকা।
3. রক্তে এল ডি এল (খারাপ) কোলেস্ট্রলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং এইচ ডি এল (ভাল) কোলেস্ট্রলের মাত্রা কমে যাওয়া।
4. খাদ্যে এন্টি অক্সিডেন্টের অভাব।
5. উচ্চ রক্তচাপ,ডায়াবেটিস এবং মদ খাওয়া।
6. শারীরিক পরিশ্রমের অভাব ও ওজন বৃদ্দি।
7. তামাক (বিড়ি,সিগারেট,গুল,জর্দা) খাওয়া।

এগুলোর মধ্যে মনসিক চাপ এমন একটি ক্ষতিকর প্রক্রিয়া যা একাই হৃদরোগ সৃষ্টি করতে পারে। মানসিক চাপের ফলে অনেক সময়ইঃ
1. রক্তের চাপ বেড়ে যায়।
2. হৃদপিন্ডের স্পন্দন বেরে যায়।
3. রক্তের তেল(ফ্যাট) জমা হওয়ার কাজ দ্রুততর হয়।
4. রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়।
5. করোনারী এবং অন্যান্য ধমনীগুলো অধিক ক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে।
6.
রক্তে “ক্লট” তৈরী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
7. ধমনীগিলোর ভিতরের দিকে(গায়ে) কোলেস্ট্রল ও ট্রাইগ্লিসারাইড জমা হতে থাকে।

উপরের কারন গুলো নিয়ন্ত্রণ যোগ্য। এছাড়া কিছু অনিয়ন্ত্রন যোগ্য কারন রয়েছে এগুলো হলঃ
1. বয়স
2. লিঙ্গ
3. বংশগত

  • কিভাবে বুঝবেন হার্ট অ্যাটাক হয়েছে?
1. বুকে প্রচন্ড ব্যাথা হবে। এরকম লাগতে পারেঃ
2. হঠাৎ অনুভব করবেন ভারি কিছু একটা যেন বসে আছে আপনার বুকের উপর
3. একটা ব্যাথার ব্যান্ড বুকের চারপাশে অনুভব করবেন
4. বুকের ব্যাথা মনে হবে যেন বুক চিপে ফেলছে
5. হজম হবে না পেটের উপরের অংশে জ্বালাপোড়া করবে

এছাড়াও
1. ছোট ছোট শ্বাস প্রশ্বাস
2. ঘেমে যাওয়া
3. অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
4. ঝাপসা দেখা
5. বমি, এসব হতে পারে

  • একা থাকা অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক থেকে কিভাবে বাঁচবেন ?
হার্ট এটাক হবার ফলে অধিকাংশ সময় মানুষ মারা যান, কারণ তারা একা থাকেন। অন্য কারো সাহায্য ছাড়া তাদের বুকের ওপর পাম্প করে হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন সম্ভব হয় না, এবং ব্যথা শুরু হবার পরে অজ্ঞান হয়ে যাবার আগ পর্যন্ত সাধারণত তাদের হাতে ১০ সেকেণ্ড সময় থাকে ।
এমতাবস্থায় বুকে ব্যথার শিকার ব্যক্তি নিজেকে সাহায্য করতে পারেন বারংবার জোরে জোরে উচ্চস্বরে কাশি দিয়ে।
লম্বা করে শ্বাস নিন। এবার কাশুন। লম্বা সময় নিয়ে দীর্ঘ কাশি দিন। এর ফলে আপনার ফুসফুসে স্পাটাম/মিউকাস উৎপন্ন হবে।
‘শ্বাস – কাশি, শ্বাস – কাশি’ এই প্রক্রিয়া প্রতি দুই সেকেণ্ডে একবার করে করতে থাকুন, যতক্ষণ না কেউ আপনার সাহায্যে এগিয়ে না আসে
অথবা যতক্ষণ আপনার হৃদযন্ত্র একা একাই স্বাভাবিকভাবে স্পন্দিত হতে থাকে।
লম্বা করে শ্বাস নেবার ফলে আপনি পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাবেন। আর কাশির ফলে আপনার হৃদযন্ত্র সংকোচন-প্রসারণ
হবে যার ফলে আপনার হৃদপিণ্ডের ভিতর দিয়ে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
এবং কয়েকবার কাশির ফলে উৎপন্ন সংকোচন-প্রসারণে হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক, স্বয়ংক্রিয় স্পন্দনে ফিরে আসার কথা।
এরপরে অপর কোনো ব্যক্তির সাহায্যে আপনি হাসপাতালে পৌঁছতে পারবেন।
  • হার্ট অ্যাটাক এ কি করা উচিত?
1. হার্ট এটাক হয়েছে ধরতে পারলে রোগিকে তাৎখনিক এসপিরিন/ ওয়ারফেরিন জাতীয় ওষুধ খাইয়ে দেয়া ভাল। এতে রক্ত জমাট বাঁধা বন্ধ হবে।
2. জিহবার নিচে নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে দিতে হবে।:|
3. রোগিকে আশ্বস্ত রাখা
  • প্রতিরোধ কি ?
1. ধুমপান না করা
2. মাদক থেকে দূরে থাকা
3. দুশ্চিন্তা না করা
4. রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা
5. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন
6. কলেস্টেরন নিয়ন্ত্রন
7. চর্বি জাতীয় খাদ্য কম খাওয়া
8. শাকসবজি – ফল বেশি খাওয়া
9. দেহের
 

স্বল্প আয়ের লোকদের কি করণীয়।

স্বল্প আয়

আয়, ব্যয় এবং সঞ্চয়ের একটা হিসাব করে ফেলুন। পরিবারের সবাইকে একসাথে নিয়ে পরিবারের বাজেট ঠিক করুন। সাথে একটি নির্দিষ্ট ডায়েরি রাখুন, যেখানে শুধুই মাসের খরচের হিসাব লেখা থাকবে। খরচের একটা খসড়া করে ফেলুন। প্রথমেই দেখে নিন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এবং মেইনটেন্যান্সের খাতে কতটা খরচ হতে পারে। মাসের বাঁধাধরা খরচের টাকা যেমন ইলেকট্রিক বিল, বাজার খরচ, ফোনের বিলের টাকা, কাজের লোকের মাইনে, ছেলেমেয়ের স্কুল, টিউশন ফি এবং আরো অন্যান্য খরচ আলাদা ভাগ করে নিন। সম্ভব হলে আলাদা আলাদা খামে ভরে, ওপরে নাম লিখে রাখুন। এতে বাড়তি খরচ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন যেখানে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা করুন যাতে হঠাৎ কোনো প্রয়োজনে সমস্যা না হয়। তবে সব মাসেই যে খরচ আর সঞ্চয়ের অনুপাত এক রকম হবে তা নয়। কিন্তু শুরুটা আগে করতে হবে। কোনো মাসে বাজেটের অতিরিক্ত খরচ হতেই পারে। সে ক্ষেত্রে যদি খরচ বেশি হয়ে যায় কিভাবে সেই ঘাটতিটা পুষিয়ে নেয়া উচিত সেটা নিয়েও মিটিংয়ে আলোচনা করুন। আগে থেকে তৈরি থাকলে পরিস্থিতি সামাল দিতে সুবিধা হবে।প্রতি মাসে কোন খাতে বেশি খরচ হচ্ছে সে দিকে লক্ষ রাখুন। বাজেটে সবচেয়ে বেশি খরচ সাধারণত হয়ে থাকে খাওয়াদাওয়ায়। যখন বাজেট ঠিক করবেন, খেয়াল রাখবেন এই খাতে যেন অপ্রয়োজনীয় খরচ না হয়।প্রতি মাসে বাড়ির সব ইলেকট্রনিক মেইনটেন্যান্স কাজ করান। এতে জিনিসপত্রও ভালো থাকবে এবং ইলেকট্রিক বিলও কম উঠবে। প্রয়োজন না পড়লে সব ঘরের আলো, পাখা চালিয়ে রাখবেন না।বাজার করতে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় জিনিসের একটি নির্দিষ্ট লিস্ট বানিয়ে নিন, যাতে দোকানে গিয়ে অযথা বাড়তি খরচ না করে ফেলেন। মাসের শুরুতেই ঠিক করে নিন মোটামুটি আপনাকে কী কী কিনতে হবে। মাসে একবার হাউজহোল্ড গুডস যেমন তেল সাবান বা বাথরুমের জিনিসপত্র কিনুন। আর তরকারি, সবজি, মাছ, গোশত, ডিমজাতীয় জিনিস সপ্তাহে একবার কিনুন। রোজকার কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময় শিশুদের সাথে না আনাই ভালো। শিশুরা নিজেদের পছন্দমতো জিনিসের জন্য স্বাভাবিকভাবেই বায়না ধরে যা অনেক সময় হয়তো বাধ্য হয়ে কিনেও দিতে হয়। ফলে বাজেটে টান পড়ে যেতে পারে। রান্নাঘরের বাজেট ঠিক রাখুন। যানবাহনে খরচ কমান। ফোন বিল নিয়ন্ত্রণ করতে প্রি-পেইড সার্ভিস বাছতে পারেন। নির্দিষ্ট খরচের ওপর চলে গেলে ফোন করা কমিয়ে দিন। মাসের শুরুতেই ফোনের জন্য একটা বাজেট নির্দিষ্ট করে নিন।



উচ্চ রক্তচাপ হলে কি করনীয়।

উচ্চ রক্তচাপ

আনতে পারে চরম পরিণতি। করোনারি হার্ট ডিজিজ, হার্টফেল, স্ট্রোক, কিডনি অকেজো ইত্যাদি মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপের ফলে।

  • কেন হাই  ব্লাড প্রেসার হয়, হলে করণীয় কি?
রক্ত চাপ যখন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখন উচ্চ রক্তচাপ হয়। মস্তিস্ক মেরুজল হৃৎপিণ্ডের তৃতীয় অংশ থেকে ওপরে উঠে স্নায়ুতন্ত্রে প্রবেশ করে। যখন মস্তিষ্ক মেরুজলে লবণের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন বহির্গত নালির বাল্বের ভেতরে অবস্থিত চুলের মতো সূক্ষ কোষগুলো শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে মস্তিষ্ক মেরুজলের প্রবাহ ব্যাহত হয়। হৃৎপিণ্ডের তৃতীয় অংশে এই মস্তিষ্ক মেরুজলকে ওপরে ঠেলার জন্য যে চাপের সৃষ্টি হয় তাই উচ্চ রক্তচাপ।
অনেক সময় দুশ্চিন্তাজনিত কারণ থেকেও এটি হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের ফলে করোনারি হার্ট ডিজিজ, হার্টফেল, স্ট্রোক, কিডনি অকেজো ইত্যাদি মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়।
লক্ষণ

  • মাথাব্যথা, বিশেষ করে পেছনের দিকে ব্যথা। অনেক সময় সকালে ঘুম থেকে উঠার পর ব্যথা অনুভূত হয়। দু-চার ঘণ্টা পর কমে যায়
  • মাথা ঘোরা
  • বুক ধড়ফড় করা
  • মনোযোগের অভাব
  • অল্পতে হাঁপিয়ে যাওয়া
  • মাংসপেশির দুর্বলতা
  • পা ফোলা
  • বুকে ব্যথা
  • নাক দিয়ে রক্ত পড়া
  •  ক্লান্তিবোধ
  • ঘাড় ব্যথা।
  • কারণ
  • ধূমপান
  • ওজন বেশি
  • অলস জীবন-যাপন
  • খাবারের সঙ্গে বেশি লবণ গ্রহণ
  • নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন
  • বংশগত কারণে
  • ক্রনিক কিডনি রোগ
  • অ্যাড্রেনাল ও থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা।
  • পথ্য
  • এক মাস সকাল ও সন্ধ্যায় দুই চামচ করে থানকুনি পাতার রস সেবন করুন। অথবা রসুন ১ কোয়া করে দুবেলা ভাতের সঙ্গে ১৫ দিন খান।
  • ৪টি তুলসীপাতা ও ২টি নিমপাতা ১ চা চামচ পানিতে চটকিয়ে খেয়ে নিন।
  • ১০০ গ্রাম পানিতে মাঝারি আকারের অর্ধেকটা লেবু চিপে দিনে ২-৩ বার পান করতে হবে।
  • যা করবেন
  • ওজন কামানো
  • লবণ ও সোডিয়ামযুক্ত খাদ্য কম গ্রহণ
  • হাঁটা, দৌড়ানো, সাঁতার কাটা ও শারীরিক পরিশ্রম করা
  • রেড মিট বর্জন করা।
রিফ্লেক্সোলজি বিন্দুসমূহঃ
৩, ৪, ৮, ২৫, ২৮, ৩৬, NP, MF উচ্চ রক্তচাপের জন্য ওপরের প্রতিটি পয়েন্টে ৭০ থেকে ৮০ বা ২ মিনিট একটি সুচালো ভোঁতা কাঠি দ্বারা চাপ প্রয়োগ করতে হয়। প্রতি ১ সেকেন্ডে ১টি করে চাপ দিতে হবে। ৬ ঘণ্টা পর পর দিনে সর্বোচ্চ ৩-৪ বার রিফ্লেক্সোলজি করা যায়। একেবারে খালি পেটে অথবা ভরা পেটে রিফ্লেক্সোলজি করা ঠিক নয়। খাওয়ার আধ ঘণ্টা পরে করা যাবে। রোগের বয়স যত দিন তার ১ : ১০ ভাগ সময়কাল পর্যন্ত থেরাপি করলে রোগ নিরাময় সম্ভব।


টিপস
উচ্চ রক্তচাপ হলে চোখ বন্ধ করে দুই হাতের কনিষ্ঠ আঙুল কানের মধ্যে দিয়ে ২-৩ মিনিট কান ঝাঁকুনি দিন।
ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ মানবদেহে রক্ত সঞ্চালনে চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। মানবদেহে রক্ত চাপের একটি স্বাভাবিক মাত্রা আছে। তার ওপর ভিত্তি করেই উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার ও কম রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করা হয়। রক্তচাপ একটি সুনির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে থাকে এবং তা দুই ধরনের হয়। ওপরের মাপকে সিস্টলিক রক্তচাপ ও নিম্নের মাপকে ডায়োস্টোলিক রক্তচাপ বলা হয়। সাধারণত মানবদেহে সিস্টলিক রক্তচাপ ১০০ থেকে ১৪০ পর্যন্ত এবং ডায়োস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ থেকে ৯০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। যদি কারও এর চেয়ে বেশি মাত্রার রক্তচাপ থাকে তবে এই অবস্থাকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার বলা হয় এবং যদি কারও এর চেয়ে কম রক্তচাপ থাকে, তবে এই অবস্থাকে কম রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার বলা হয়ে থাকে। পানিশূন্যতা দেখা দিলে যেমন অতিরিক্ত ঘাম, ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ_ দেহের ভেতরে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে যেমন_ রক্তবমি, পায়খানার সঙ্গে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে, শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত বা দুর্ঘটনার ফলে রক্তপাত ঘটলে এবং অপুষ্টিজনিত কারণে লো ব্লাড প্রেসার দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের গর্ভের প্রথম ৬ মাস হরমোনের প্রভাবে লো প্রেসার হতে পারে। মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া, মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা, চোখে অন্ধকার দেখা বা সরষে ফুলের মতো দেখা বা চোখে ঝাপসা দেখা, শারীরিক দুর্বলতা এবং মানসিক অবসাদগ্রস্ততা, কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা, ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বা হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, খুব বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া, অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদকম্পন, নাড়ি বা পালসের গড়ি বেড়ে গেলে বুঝতে হবে আপনি লো ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হয়েছেন। লো প্রেসার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ ও উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই প্রেসার বেড়ে যায়। প্রয়োজনে শিরায় স্যালাইন বা এ জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রক্তক্ষরণ হলে প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত সঞ্চালন বা ব্লাড ট্রান্সফিউশন দিতে হবে।

হিংসা তাড়ানোর উপায়।

হিংসা


অনেকেই অন্যের উন্নতি কিংবা ভালো কোনো খবরে কষ্ট পান। এ ধরনের পরশ্রীকাতর মনোভাব হিংসা ও বিদ্বেষ তৈরি ছাড়াও নানা ধরনের জটিলতা তৈরি করে। তবে কিছু উপায় রয়েছে, যার সাহায্যে এমন মনোভাব দূর করা যায়। এ লেখায় তুলে ধরা হলো তেমন কিছু উপায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
নির্দিষ্ট বিষয় উপেক্ষা
সম্প্রতি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সের গবেষকরা হিংবা বা পরশ্রীকাতরতা দূর করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন। গবেষকরা জানান, আত্মবিশ্বাস ও আত্মনির্ভরশীলতা ছাড়াও নির্দিষ্ট বিষয়কে উপেক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
গবেষকরা জানান, পরশ্রীকাতরতায় যারা নিয়মিত ভোগেন তাদের নিয়মিত মানসিক চাপে পড়তে হয়। পরশ্রীকাতরতার কারণে তাদের মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপেও প্রভাব পড়ে। এছাড়া মানসিক নানা সমস্যা তৈরি হয় এবং তাদের কর্মক্ষেত্র, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের ওপর এর প্রভাব পড়ে।
এ সমস্যা সমাধানে নির্দিষ্ট বিষয়কে মেনে নেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। অপরের সব বিষয়ে মাথা ঘামানো বাদ দিতে হবে। উপেক্ষা করা শিখতে হবে, যেন অপরের কোনো বিষয় আপনার মনের মাঝে প্রভাব ফেলতে না পারে।
রূপান্তর করুন
আমরা যে সমাজে বাস করি সেখানে সর্বত্রই প্রদর্শন প্রবণতা বিদ্যমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই নিজে যা নয়, তা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই অন্যের অবস্থা দেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তবে এ পরিস্থিতি আপনি চাইলেই একটু ভিন্নভাবে গ্রহণ করতে পারেন। অনেকেই অন্য মানুষের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেন। এক্ষেত্রে আপনার কখনোই এ কাজটি করা উচিত হবে না। প্রত্যেকের পরিস্থিতি ভিন্ন- এ বিষয়টি মানতে হবে। তুলনা করে নিজেকে হীনমন্যতার মাঝে নেবেন না। আপনার পরশ্রীকাতরতাকে সম্মানে রূপান্তরিত করুন। আর বন্ধুর কোনো অর্জনকে নিজের অর্জন বলেই মনে করুন।
বন্ধ করুন
আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনোই নিজের হিংসা-বিদ্বেষকে বাড়তে দেয় না। আশপাশের মানুষের কিংবা বন্ধু-বান্ধবের ভালো সংবাদে অনেকেরই পরশ্রীকাতরতা দেখা দিতে পারে। তবে তা যেন বাড়তে না পারে সেজন্য নিজেকেই সতর্ক হতে হয়। ওসব নিয়ে চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণ বন্ধ করার চেষ্টা করতে হয়। যে ফেসবুক পোস্ট, টুইট কিংবা সংবাদে আপনার পরশ্রীকাতরতা তৈরি হয়, সে সংবাদগুলো এড়িয়ে চলুন।
 


ডায়াবেটিস ও প্রতিকার।


ডায়াবেটিস

ডায়াবেটিস একটি বিপাক জনিত রোগ। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামের হরমোনের সম্পূর্ণ বা আপেক্ষিক ঘাটতির কারনে বিপাকজনিত গোলযোগ সৃষ্টি হয়ে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এক সময় তা প্রস্রাবের সংগে বেরিয়ে আসে। এই সামগ্রিক অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে। ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে বা সংক্রামক কোন রোগ নয়।

ডায়াবেটিস হয়েছে কিভাবে বুঝবেন এবং ডায়াবেটিস হলে সাধারণত যেসব লক্ষন ও উপসর্গ গুলো দেখা দেয়ঃ
  • ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
  • খুব বেশী পিপাসা লাগা।
  • বেশী ক্ষুধা পাওয়া।
  • যথেষ্ঠ খাওয়া সত্ত্বেও ওজন কমে যাওয়া।
  • ক্লান্তি ও দুর্বলতা বোধ করা।
  • ক্ষত শুকাতে দেরী হওয়া।
  • খোশ-পাঁচড়া,ফোঁড়া প্রভৃতি চর্মরোগ দেখা দেওয়া।
    চোখে কম দেখা।
ডায়াবেটিসের প্রকারভেদ।
ডায়াবেটিসের মূলত চারটি ধরন রয়েছে।

ক) ধরন ১ (টাইপ.১)- এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন একেবারেই তৈরী হয় না। সাধারণতঃ ৩০ বৎসরের কম বয়সে (গড় বয়স ১০-২০ বৎসর) এ ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। সু্‌স্থ্য থাকার জন্য এ ধরনের রোগীকে ইনসুলিন নিতে হয়। এই ধরনের রোগীরা সাধারনত কৃষকায় হয়ে থাকেন।

খ) ধরন ২ (টাইপ.২)- এই শ্রেণীর রোগীর বয়স অধিকাংশ ক্ষেত্রে ত্রিশ বৎসরের উপরে হয়ে থাকে। তবে ত্রিশ বৎসরের নিচে এই ধরনের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই ধরনের রোগীদের শরীরে ইনসুলিন তৈরী হয় তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ নয় অথবা শরীরে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যায়। অনেক সময় এই দুই ধরনের কারণ একই সাথে দেখা দিতে পারে। এই ধরনের রোগীরা ইনসুলিন নির্ভরশীল নন। অনেক ক্ষেত্রে খাদ্যাভাসের পরিবর্তন এবং নিয়িমিত ব্যয়ামের সাহায্যে এদের চিকিৎসা করা সম্ভব। এই ধরনের রোগীরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে স্থূলকায় হয়ে থাকেন।

গ) অন্যান্য নির্দিষ্ট কারণ ভিত্তিক শ্রেণী-
  • জেনেটিক কারনে ইনসুলিন তৈরী কম হওয়া
  • জেনেটিক কারনে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া
  • অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ
  • অন্যান্য হরমোনের আধিক্য
  • ঔষধ ও রাসায়নিক দ্রব্যের সংস্পর্শ
  • সংক্রামক ব্যধি
  • অন্যান্য কোন প্রতিরোধ ক্ষমতার জটিলতা
এই ধরনের রোগী ক্ষীণকায় ও অপুষ্টির শিকার হয়ে থাকে এবং ইনসুলিন ছাড়া অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। এই ধরনের রোগীর বয়স ৩০ বৎসরের নিচে হয়ে থাকে।

ঘ) গর্ভকালীন ডায়াবেটিস-অনেক সময় গর্ভবতী অবস্থায় প্রসূতিদের ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। আবার প্রসবের পর ডায়াবেটিস থাকে না। এই প্রকারের জটিলতাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়াবেটিস হলে গর্ভবতী,ভ্রুণ,প্রসূতি ও সদ্য-প্রসূত শিশু সকলের জন্যই বিপদজনক হতে পারে। বিপদ এড়ানোর জন্য গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিসের প্রয়োজনে ইনসুলিনের মাধ্যমে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। এই ধরনের রোগীদের প্রসব হাসপাতালে করা প্রয়োজন।
 
চিকিৎসার জন্য যোগাযোগ
  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
  • মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
  • বারডেম
  • বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
  • বেসরকারী হাসপাতাল।
  • জেলা সদর হাসপাতাল
কি কি পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারেঃ
  • খালি পেটে রক্ত পরীক্ষা
  • ভরা পেটে রক্ত পরীক্ষা
  • প্রস্রাব পরীক্ষা
  • কোলেস্টরল,থাইরয়েডের কার্যাবলী,যকৃত এবং কিডনী পরীক্ষা
ডায়াবেটিসের চিকিৎসাঃ
ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ সারানো বা নিরাময় করা যায় না। তবে এ রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং এই বিষয়ে ডাক্তার রোগীকে সাহায্য করতে পারেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয়
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চারটি নিয়ম মানতে হয়ঃ
ক) নিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ
খ) সাধ্যমত কায়িত পরিশ্রম ও ব্যায়াম
গ) ঔষধ
ঘ) শিক্ষা
 
প্রতিটি পর্যায়ে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
ক) নিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ -ডায়াবেটিস হলে খাদ্যের একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা ডায়াবেটিস হওয়ার আগে যে রকম থাকে পরেও একই থাকে। পুষ্টির চাহিদার কোন তারতম্য হয় না। খাদ্যের নিয়ম মেনে চলার প্রধান উদ্দেশ্য থাকে:ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, স্বাস্থ্য ভাল রাখা।

খ) ব্যায়াম-রোগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যায়াম বা শরীর চর্চার ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ব্যায়াম করলে শরীর সু্‌স্থ থাকে,ইনসুলিনের কার্যকারিতা ও নি:সরনের পরিমাণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত: ৪৫ মিনিট হাঁটলে শরীর যথেষ্ঠ সু্‌স্থ থাকবে। শারীরিক অসুবিধা থাকলে সাধ্যমত কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।

গ) ঔষধ-সকল ডায়াবেটিক রোগীকেই খাদ্য,ব্যায়াম ও শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
 
 

ধর্ষণ সম্পর্কিত শাস্তি,জেনে রাখা উচিৎ।



ধর্ষণ

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) ধারা ৯-এর ১-এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ
 
যদি কোনো পুরুষ বিবাহ বন্ধন ছাড়া ১৬ বছরের অধিক বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতি ব্যতিরেকে বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলক ভাবে তার সম্মতি আদায় করে অথবা ১৬ বছরের কম বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতি সহ বা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সঙ্গম করেন, তাহলে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে। ধর্ষণকারীর জরিমানা ও শাস্তিনারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী-২০০৩)-এর ধারা ৯-তে বলা হয়েছেঃ
 
১. যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
 
২. যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ধর্ষণ বা ওই ধর্ষণ-পরবর্তী তার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে ওই ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
 
৩. যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ফলে ওই নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে বা তিনি আহত হন, তাহলে ওই দলের প্রত্যেক ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অতিরিক্ত এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
 
৪. যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া যদি কেউ ধর্ষণের চেষ্টা করেন তাহলে ওই ব্যক্তি অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
 
৫. যদি পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন কোনো নারী ধর্ষিত হন, তাহলে যাদের হেফাজতে থাকাকালীন ওই রূপ ধর্ষণ সংঘটিত হয়েছে, সেই ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা ধর্ষিত নারীর হেফাজতের জন্য সরাসরি দায়ী ছিলেন, তিনি বা তারা প্রত্যেকে ভিন্ন রূপ প্রমাণিত না হলে হেফাজতের ব্যর্থতার জন্য অনধিক ১০ বছরের কিন্তু অনূ্যন পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।
 
আইনি সহায়তা নির্যাতনের শিকার মেয়েটি সবচেয়ে কাছের থানা ও পুলিশের সহায়তা পাওয়ার অধিকারী। থানায় এজাহার নিতে না চাইলে নির্যাতনের শিকার মেয়েটির অভিভাবক কিংবা নির্যাতিত মেয়েটি নিজে বাদী হয়ে আদালতে নালিশি মামলা করতে পারেন। জেলা জজের আওতায় প্রতিটি জেলায় আইন সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে আবেদন করলে আর্থিক অথবা আইনজীবীর সহায়তা পেতে পারেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কাছে আবেদন করে আইনি সহায়তা নিতে পারেন। থানা ও হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে আইনগত সহায়তা ও চিকিৎসা পেতে পারেন। তেজগাঁও থানায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারেও সহায়তা পেতে পারেন।
 
প্রজিৎ কুমার রায়

সুখী থাকার উপায়।


জীবন কতনা অদ্ভূত! কখনও কতইনা সুন্দর আর আনন্দময়, আর কখনও কত কষ্টকর! আমাদের জীবনটাই যে এমন! কেউ তো জানিনা আমার যতি চিহ্ন কোথায়।

কী নিয়ে দুঃখ করবো আমি? আজ হয়ত আমি অনেক সুখী, যদি আজই চলে যেতে হয় এই জগত ছেড়ে, তবে আমি কি প্রস্তুত যাওয়ার জন্য? আমি যতটুকু সুখে আছি, অনেকেই তো তার চাইতে খারাপ আছেন, তাইনা?
জীবনটাই তো এমন! কীভাবে ভালো থাকা যায় সে বিষয়ে কিছু কথা, কীভাবে মনটাকে ভালো রাখা যাবে সে বিষয়ে কিছু কথা।

১) নিজেকে কখনও অন্যের সাথে তুলনা করবেন না।

২) নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা থেকে বিরত থাকুন। সবকিছুকে পজেটিভ ভাবে গ্রহন করতে চেষ্টা করুন।

৩) শত্রুতা এবং অন্যের প্রতি ঘৃণা বজায় রাখবেন না। এতে কেবল দুঃশ্চিন্তা বাড়ে এবং মানসিক শান্তি নষ্ট হয়, যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

৪) নিজের এবং অন্যের অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিন, শিক্ষাকে মনে রাখুন, ভুলকে ভুলে যান। অতীতের ভুল নিয়ে অতিরিক্ত ঘাটাঘাটি করে তিক্ততা বাড়িয়ে বর্তমানের সুন্দর সময়কে নষ্ট করবেন না।

৫) জীবনের সব ক্ষেত্রে জয় লাভ করা অসম্ভব। তাই হার মেনে নিতে প্রস্তুত থাকুন। এটাও আপনার একটা মানসিক বিজয়।

৬) অন্যের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করুন।

৭) সুসময় বা দুঃসময় যাই হোক না কেন, সবই বদলাবে, এটাই চিরন্তন নিয়ম, তাই কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত উৎফুল্ল বা অতিরিক্ত দুঃখিত হবেন না। বিষয় গুলো আশা করি বুঝাতে পেরেছি। আর এই স্বল্প সময়ের পৃথিবীতে যেন আমরা সৃস্টিকর্তাকে সন্তুষ্ট করে বিদায় নিতে পারি সেই প্রার্থনা আমার সবার জন্য রইলো।

শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৭

বিবাহের পূর্বে যে চিন্তা গুলো করতে হবে।


জন্ম ও মৃত্যুকে বাদ দিলে আমাদের মানব জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে বিয়ে। আজকাল ডিভোর্সের হার আশঙ্কাজনক জনক হারে বেড়ে গেলেও বিয়ে আসলে এমন কোন বিষয় নয় যে চাইলেই ভেঙে ফেলা সম্ভব। বরং একটি বিয়ে ভাঙা বিয়ে করার চাইতেও অনেক বেশি কঠিন একটি কাজ। আর তাই, বিয়ে করার আগে চতুর্দিকে সবকিছু ভালমত ভেবেচিন্তে তবেই করা উচিত। মনে রাখবেন, বিয়ের ক্ষেত্রে সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সঠিক সময়ে বিয়ে করলে আপনার জীবনটি যেমন হয়ে উঠবে আরও সুন্দর, ঠিক একইভাবে ভুল সময়ে বিয়ে ডেকে আনবে সর্বনাশ। আজ জেনে নিন, জীবনে কোন কাজগুলো করার আগে বিয়ে করাটা একেবারেই উচিত হবে না।

১) অতীতের সাথে সম্পর্ক পুরোপুরি ছেদ করার আগে,
অতীত সকলেরই আছে। কিন্তু অতীত সম্পর্কের সকল চিহ্ন নিজের জীবন ও মন থেকে না মুছে বিয়ে করতে যাওয়াটা বোকামি। বিয়ে করলে ভুলে যাব- এই ধরণের মনোভাব রাখাটাও ঠিক নয় আসলে।

২) কারো চাপে নয়, একদম নিজের ইচ্ছা মানসিকভাবে প্রস্তুত হবার আগে,
আমাদের সমাজে বিয়ে করার জন্য একটা পারিবারিক চাপ দেয়া হয় সব সময়েই। অনেক ক্ষেত্রে তো রীতিমত ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইল করা হয়। এমনকি প্রেমিক-প্রেমিকারাও চাপ প্রয়োগ করেন বিয়ে করার জন্য। তবে পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, বিয়ে তখনই করবেন যখন আপনার মন বলবে।

৩) লেখাপড়া শেষ না করে,
লেখাপড়া শেষ না করে বিয়ে করার কথা ভাববেনও না আজকালকার আধুনিক জীবনে। পরিণত বয়সের জন্য অপেক্ষা করুন।

৪) আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবার আগে,
আপনি নারী হোন বা পুরুষ, বিয়ের আগে নিজের ক্যারিয়ারটা অবশ্যই গড়ে নেবেন। এতে জীবনটা অনেক বেশি সুন্দর হবে।

৫) প্রেমের সম্পর্কে মানুষটিকে ভালো মত জেনে-বুঝে নেয়ার আগে,
প্রেম করছেন? খুব ভালো কথা, করুন। তবে মানুষটিকে একদম ভালো করে জেনে ও বুঝে ওঠার আগে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবেন না মোটেও।

৬) পরিবার সম্পর্কে খুব ভালো করে খোঁজ খবর না নিয়ে,
বিয়ে প্রেমের হোক বা পারিবারিক, পরিবার ও পরিবারের মানুষদের সম্পর্কে খুব ভালোমত খোঁজ নিন।

৭) সংসারের জন্য যথেষ্ট সঞ্চয় না করে,
নতুন জীবন গড়তে গেলে অর্থের প্রয়োজন অবশ্যই আছে। এবং সেটা বেশ ভারী একটা অংক। আর তাই, পর্যাপ্ত পরিমাণ সঞ্চয় না করে বিয়ে করতে যাবেন না।


রিট পিটিশন কি ?

হাইকোর্ট

কোন নাগরীকের মৌলিক অধিকার লংঘন হয়েছে এমন ও প্রচলিত কোন আইনে প্রতিকার নেই এমন দুই'টি অধিক্ষেত্রে রিট আবেদন নেয়া ও ডিরেকশন দেওয়ার ইনহ্যারেন্ট পাওয়ার হাইকোর্টকে আমাদের সংবিধানের ৪৪ অনুচ্ছেদে দেয়া আছে। তার মানে,

১. সংবিধানে বর্নিত নাগরীকের মৌলিক অধিকার লংঘিত হয়েছে এমন কোন বিষয়ে মৌলিক অধিকার বলবৎ করার জন্য রীট পিটিশন দায়ের করা যেতে পারে। আর
২. প্রচলিত কোন আইনে প্রতিকার নেই এমন কোন বিষয়ে সংক্ষুব্দ্ধ কোন ব্যাক্তি প্রতিকার চেয়ে মহামান্যা হাইকোর্টে রিট পিটিশনে ফরিয়াদ করতে পারে।

পাঁচ ধরনের রীট আপীল বা আবেদনপত্রের বিধান রয়েছে। এগুলো হচ্ছে: তলবীপত্র, হেবিয়াস কর্পাস বা কারণ দর্শানোর আবেদনপত্র, ম্যান্ডামাস বা হুকুমনামা, নিষেধাজ্ঞা এবং গ্রেফতারের বা ডিক্রি জারির পরোয়ানা।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২নং অনুচ্ছেদে রীট পিটিশনের বিধান রয়েছে এবং তার নিশ্চয়তাও বিধান করা হয়েছে। সেখানে অবশ্য রীটসমূহ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে পৃথক কোনো বর্ণনা নেই।

 

বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক অধিকার

 বাংলাদেশ সংবিধান

বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭-৪৪ অনুচ্ছেদে মোট ১৮টি মৌলিক অধিকারের উল্যেখ রয়েছে। মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে আদালত কর্তৃক বলবদ করা যায়।

অনুচ্ছেদ-২৭ঃ সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয়লাভের অধিকারী।
অনুচ্ছেদ-২৮ঃ (১) কেবল, ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।
(২) রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারীপুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।
(৩) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীন করা যাইবে না।
(৪) নারী বা শিশুদের অনুকুলে কিংবা নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশের অগ্রগতির জন্য বিশেষ বিধান-প্রণয়ন হইতে এই অনুচ্ছেদের কোন কিচুই রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।
অনুচ্ছেদ-২৯ঃ (১) প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।
(২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না।
(৩) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই (ক) নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপর্যুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁহাদের অনুকুলে বিশেষ বিধান-প্রণয়ন করা হইতে,
(খ) কোন ধর্মীয় বা উপ-সম্প্র-দায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মীবলম্বী বা উপ-সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান সংবলিত যে কোন আইন কার্যকর করা হইতে,
(গ) যে শ্রেণীর কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তাহা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেইরূপ যে কোন শ্রেণীর নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হইতে রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।
অনুচ্ছেদ-৩০ঃ রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোন নাগরিক কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নিকট হইতে কোন খেতাব, সম্মান, পুরস্কার বা ভূষণ গ্রহণ করিবেন না।
অনুচ্ছেদ-৩১ঃ আইনের আশ্রয়লাভ এবং আইনানুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহার লাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষতঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না, যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে।
অনুচ্ছেদ-৩২ঃ আইনানুযায়ী ব্যতীত জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা হইতে কোন ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা যাইবে না।
অনুচ্ছেদ-৩৩ঃ (১) গ্রেপ্তারকৃত কোন ব্যক্তিকে যথাসম্ভব শীঘ্র গ্রেপ্তারের কারণ জ্ঞাপন না করিয়া প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না এবং উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার মনোনীত আইনজীবীর সহিত পরামর্শেরও তাঁহার দ্বারা আত্মপক্ষ-সমর্থনের অধিকার হইতে বঞ্চিত করা যাইবে না।
(২) গ্রেপ্তারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে (গ্রেপ্তারের স্থান হইতে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আনয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাঁহাকে তদতিরিক্ত-কাল প্রহরায় আটক রাখা যাইবে না।
(৩) এই অনুচ্ছেদের (১) ও (২) দফার কোন কিছুই সেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, (ক) যিনি বর্তমান সময়ের জন্য বিদেশী শত্র“; অথবা
(খ) যাহাকে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইনের অধীন গ্রেপ্তার করা হইয়াছে বা আটক করা হইয়াছে।
(৪) নিবর্তনমূলক আটকের বিধান-সংবলিত কোন আইন কোন ব্যক্তিকে ছয় মাসের অধিক কাল আটক রাখিবার ক্ষমতা প্রদান করিবে না যদি সুপ্রীম কোর্টের বিচারক রহিয়াছেন বা ছিলেন কিংবা সুপ্রীম কোর্টের বিচারকপদে নিয়োগলাভের যোগ্যতা রাখেন, এইরূপ দুইজন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত একজন প্রবীণ কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত কোন উপদেষ্টা-পর্ষদ উক্ত ছয় মাস অতিবাহিত হইবার পূর্বে তাঁহাকে উপস্থিত হইয়া বক্তব্য পেশ করিবার সুযোগদানের পর রিপোর্ট প্রদান না করিয়া থাকেন যে, পর্ষদের মতে উক্ত ব্যক্তিকে তদতিরিক্ত কাল আটক রাখিবার পর্যাপ্ত কারণ রহিয়াছে।
(৫) নিবর্তনমূলক আটকের বিধান সংবলিত কোন আইনের অধীন প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী কোন ব্যক্তিকে আটক করা হইলে আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষ তাঁহাকে যথাসম্ভব শ্রীঘ্র আদেশদানের কারণ জ্ঞাপন করিবেন এবং উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য-প্রকাশের জন্য তাঁহাকে যত সত্বর সম্ভব সুযোগদান করিবেন ঃ
তবে শর্ত থাকে যে, আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় তথ্যাদি-প্রকাশ জনস্বার্থ-বিরোধী বলিয়া মনে হইলে অনুরূপ কর্তৃপক্ষ তাহা প্রকাশে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করিতে পারিবেন।
(৬) উপদেষ্টা-পর্ষদ কর্তৃক এই অনুচ্ছেদের (৪) দফার অধীন তদন্তের জন্য অনুসরণীয় পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নির্ধারণ করিতে পারিবেন।
অনুচ্ছেদ-৩৪ঃ (১) সকল প্রকার জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধ; এবং এই বিধান কোনভাবে লঙ্ঘিত হইলে তাহা আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই সেই সকল বাধ্যতামূলক শ্রমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যেখানে (ক) ফৌজদারী অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তি আইনতঃ দন্ডভোগ করিতেছেন; অথবা
(খ) জনগণের উদ্দেশ্যসাধানকল্পে আইনের দ্বারা তাহা আবশ্যক হইতেছে।
অনুচ্ছেদ-৩৫ঃ (১) অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটন-কালে বলবৎ ছিল, এইরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দন্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাঁহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।
(২) এক অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে একাধিকবার ফৌজদারীতে সোপর্দ ও দন্ডিত করা যাইবে না।
(৩) ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।
(৪) কোন অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাইবে না।
(৫) কোন ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না।
(৬) প্রচলিত আইনে নির্দিষ্ট কোন দণ্ড বা বিচারপদ্ধতি সম্পর্কিত কোন বিধানের প্রয়োগকে এই অনুচ্ছেদের (৩) বা (৫) দফার কোন কিছুই প্রভাবিত করিবে না।
অনুচ্ছেদ-৩৬ঃ জনস্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধÑসাপেক্ষে বাংলাদেশের সর্বত্র অবাধ চলাফেরা, ইহার যে কোন স্থানে বসবাস ও বসতিস্থাপন এবং বাংলাদেশ ত্যাগ ও বাংলাদেশে পুনঃপ্রবেশ করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
অনুচ্ছেদ-৩৭ঃ জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধ্য-নিষেধÑসাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।
অনুচ্ছেদ-৩৮ঃ জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধ্য-নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে। তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যক্তির উক্তরূপ সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি Ñ
(ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়;
(খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে গঠিথ হয়;
(গ) উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গী কার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; বা
(ঘ) উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এই সংবিধানের পরিপন্থী হয়।
অনুচ্ছেদ-৩৯ঃ (১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাদান করা হইল।
(২) রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, বিদেশী রাষ্ট্রসমূহের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, জনশৃঙ্খলা, শালীনতা বা নৈতিকতার স্বার্থে কিংবা আদালত-অবমাননা, মানহানি বা অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা সম্পর্কে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে (ক) প্রত্যেক নাগরিকের বাক্ ও ভাব-প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের, এবং
(খ) সংবাদক্ষেত্রে স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দান করা হইল।
অনুচ্ছেদ-৪০ঃ আইনের দ্বারা আরোপিত বাধা-নিষেধÑসাপেক্ষে কোন পেশা বা বৃত্তি গ্রহণের কিংবা কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার জন্য আইনের দ্বারা কোন যোগ্যতা নির্ধারিত হইয়া থাকিলে অনুরূপ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন আইনসঙ্গত পেশা বা বৃত্তি-গ্রহণের এবং যে কোন আইনসঙ্গত কারবার বা ব্যবসায়-পরিচালনার অধিকার থাকিবে।
অনুচ্ছেদ-৪১ঃ (১) আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা- সাপেক্ষে (ক) প্রত্যেখ নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে;
(খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে।
(২) কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে যোগদানকারী কোন ব্যক্তির নিজস্ব ধর্ম-সংক্রান্ত না হইলে তাঁহাকে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা উপাসনায় অংশগ্রহণ বা যোগদান করিতে হইবে না।
অনুচ্ছেদ-৪২ঃ (১) আইনের দ্বারা আরোপিত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর ও অন্যভাবে বিলি-ব্যবস্থা করিবার অধিকার থাকিবে এবং আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত কোন সম্পত্তি বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বা দখল করা যাইবে না।
(২) এই অনুচ্ছেদের (১) দফার অধীন প্রণীত আইনে ক্ষতিপূরণসহ বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্তকরণ বা দখলের বিধান করা হইবে এবং ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণ কিংবা ক্ষতিপূরণ নির্ণয় ও প্রদানের নীতি ও পদ্ধতি নির্দিষ্ট করা হইবে; তবে অনুরূপ কোন আইনে ক্ষতিপূরণের বিধান অপর্যাপ্ত হইয়াছে বলিয়া সেই আইন সম্পর্কে কোন আদালতে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
অনুচ্ছেদ-৪৩ঃ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের (ক) প্রবেশ, তল্লাশী ও আটক হইতে স্বীয় গৃহে নিরাপত্তা-লাভের অধিকার থাকিবে; এবং
(খ) চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনতা-রক্ষার অধিকার থাকিবে।
অনুচ্ছেদ-৪৪ঃ (১) এই ভাগে প্রদত্ত অধিকার সমূহ বলবৎ করিবার জন্য এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের (১) দফা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের নিকট মামলা রুজু করিবার অধিকারের নিশ্চয়তা দান করা হইল।
(২) এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটাইয়া সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোন আদালতকে তাহার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ঐ সকল বা উহার যে কোন ক্ষমতা দান করিতে পারিবেন।


রীট হলে সরকার পক্ষের করনীয়।

Law

১। প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের দায়েরকৃত রীট মামলা সরকারের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা।

২। উচ্চ আদালতে রীট পিটিশন দাখিলের পর আবেদনকারী কর্তৃক প্রেরিত নোটিশ অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় হতে প্রাপ্ত হলে রীট আবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে প্রেরণ।

৩। হাইকোর্ট বিভাগে রীট মামলায় সরকারের বিরুদ্ধে রায় প্রদত্ত হলে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করা হবে কিনা তদমর্মে আইনগত মতামত প্রদান।

৪। যে সমস্ত রীট মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আপীল হয়ে থাকে সে সমস্ত মোকদ্দমায় বাংলাদেশ সরকারের স্বার্থ রক্ষার্থে মামলাসমূহ পরিচালনার নিমিত্ত ‘এ্যাডভোকেট অন রেকর্ড’ নিয়োগ এবং উক্ত মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

৫। আপীলযোগ্য মোকদ্দমাসমূহ সরকার পক্ষে পরিচালনা করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপন এবং উক্ত কার্যালয়ের সাথে পরামর্শক্রমে সংশ্লিষ্ট মোকদ্দমায় যাবতীয় কার্য সম্পাদন।

৬। রীট মোকদ্দমাসমূহে সরকার পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ স্থাপন।

৭। মোকদ্দমার ব্যাপারে সরকারের পক্ষে হলফনামা সম্পাদন, অত্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের পক্ষে কাউন্টার এফিডেফিট দাখিল করা ও মোকদ্দমাসমূহ নিস্পত্তির পর রায়ের নকল সংগ্রহপূর্বক ফলাফল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/দপ্তরকে অবহিতকরণ।

৮। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর থেকে প্রাপ্ত রীট সংক্রান্ত বিষয়ে আইনগত মতামত প্রদান।

৯। ‘এ্যাডভোকেট অন-রেকর্ড’ এর দাখিলি বিল পরীক্ষান্তে পরিশোধের ব্যবস্থা গ্রহণ।

১০। দৈনন্দিন কার্য তালিকায় সন্নিবেশিত সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট রীট মামলাসমূহ পর্যালোচনা করে শুনানির জন্য সংশ্লিষ্ট নথি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে প্রেরণ।

১১। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য দায়িত্ব পালন।

সমালোচনা করে কোন লাভ নাই, বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন?



আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে একবার নিজের বিবেককে প্রশ্ন করে দেখুন তো? অন্যকে নিয়ে যে সমালোচনা করছেন, আসলেই কি তা ঠিক হচ্ছে!!!
বিবেক ঠিকই সঠিক উত্তর টাই দিবে। কারণ বিবেক সবসময় সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকে।
আমরা যে অন্যের সমালোচনায় মত্ত থাকি, আমরা নিজের সম্পর্কেই কতটা জানি?
নিজেকে আগে এই প্রশ্নগুলো করে দেখুন- ব্যক্তি হিসেবে আমি কতোটা পারফেক্ট? আমাদের কি কি দোষ ত্রুটি রয়েছে? তাহলেই দেখবেন একে একে নিজের খুঁত বা দুর্বলতা বের হয়ে আসছে এবং খুঁজে বের করাও কিন্তু খুব একটা কঠিন কাজ নয়। তাহলে নিজের ইম্পারফেকশনগুলো খুঁজে নিয়ে তা সমাধান করতে আমাদের খুব একটা কষ্ট হবে না।
নিজের দোষগুলো খুজে বের করে তা সমাধানের দিকে নিয়ে আসা একটু কঠিন হলেও অসম্ভব তো আর না! কেননা, আমরা নিত্য নৈমিত্তিক অন্যের যে দোষ ত্রুটি দেখে/শুনে থাকি, সেগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখাই হচ্ছে নিজের সমালোচনা করার প্রথম ধাপ।
অন্যের সমালোচনা প্রকাশ্যে অন্যদের কাছে বলে না বেরানোর থেকে মনে মনে নিজের বিবেকের সাথে প্রশ্ন করলেই চলবে। এতে বিবেক যেদিকে রায় দিবে না, সেদিকে না চললেই হবে। আর এটাই হচ্ছে আত্মসমালোচনা, যা নিজেরই সমালোচনার ফলাফল।
ভালো একজন মানুষ হতে হলে অবশ্যই নিজেকে আগে জানতে হবে। আর যে নিজের সমালোচনা করতে পারে, সেই তো আসল বুদ্ধিমান। কারণ সে তার নিজেকে জানে, তার দোষ ত্রুটির খবর রাখে। অন্যকে জানার আগে নিজেকে জানা কি গুরুত্বপূর্ণ না?? অবশ্যই।
অন্যের সমালোচনা করে আপনি পার পেয়ে যাবেন এটা ভুল ধারণা! একটা না একটা সময় আপনার চাদরে মোড়া খারাপ দিকগুলো অন্যের সামনে প্রকাশ হবেই। তখন আর লজ্জার শেষ থাকবে না। তাই নিজেকে ভালোভাবে তৈরি করে, তারপর অন্যকে বিচার করতে যাওয়াই ভালো।
অন্যের কিছু দিক খারাপ লাগতেই পারে। সেক্ষেত্রে, সেটা সরাসরি তাকে বলাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
সবার আগে নিজেকে জানতে এবং চিনতে হবে। এরপর বাইরের দুনিয়াকে জানার পালা। অন্যের সমালোচনা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখলে সমাজও সুন্দর করা সম্ভব হবে
। 


রেস্টুরেন্ট_HD