রবিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভবিষ্যদ্বাণীতে কলিযুগের বৈশিষ্ট্য


23845551_1494755020640657_6357713640455151951_o.jpg
ভাগবত পুরাণ। বাঙালি তথা বৈষ্ণব হিন্দুদের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্মগ্রন্থ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জীবনী গ্রন্থও বলা যায় এই ভাগবত পুরাণকে।
বেদ তথা সনাতন ধর্মের মূল শিক্ষাগুলোও এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে সাবলীল ভাবে। তাইতো এতো বেশি জনপ্রিয় এই গ্রন্থটি। আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে রচিত এই গ্রন্থের শেষ অংশে আমরা দেখতে পাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্বাপর যুগের শেষে কলিযুগের আগমনে পৃথিবীর অবস্থা কেমন হবে সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। আশ্চর্য হলেও সত্য যে শ্রীকৃষ্ণের সেই সুপ্রাচীন ভবিষ্যদ্বাণী গুলো আজ বাস্তবে অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেছে।
এরকম কিছু ভবিষ্যত্‍বাণী জেনে নেওয়া যাকঃ
১. ধর্ম, সততা, পরিচ্ছন্নতা, সহ্যশক্তি, ক্ষমাশীলতা, আয়ু, শারীরিক ক্ষমতা এবং স্মৃতিশক্তি - সবই কলিযুগে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পাবে।
২. কলিযুগে অর্থই মানুষের একমাত্র ক্ষমতা হিসেবে বিবেচিত হবে। আইন ও সুবিচার পাওয়ার সম্ভাবনা আর্থিক ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত থাকবে।
৩. নারী-পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে অর্থ ও যৌনতাই প্রাধান্য পাবে। নারীত্ব ও পুরুষত্ব বলতে একমাত্র যৌন ক্ষমতা বোঝানো হবে।
৪. শুধুমাত্র সাদা সুতো গলায় ঝোলালেই একজন ব্রাহ্মণ হিসেবে পরিচিতি পাবে।
৫. মানুষের মধ্যে ধর্ম কমবে। বদলে বাড়বে ধর্মের প্রতি বাহ্যিক আড়ম্বর। উপার্জনের নিরিখেই মানুষের শিক্ষা-দীক্ষা বিবেচিত হবে। যে ছল-চাতুরি করে অনেক টাকা রোজগার করে, তাকেও সমাজে উচ্চ-পদস্থ হিসেবে দেখা হবে।
৬. শঠতা আর কোনও দোষ হিসেবে দেখা হবে না। টাকা না থাকলে সমাজে কোনও মূল্য থাকবে না। নারী-পুরুষের বিবাহ বন্ধনকে কেবলমাত্র মৌখিক চুক্তি হিসেবে দেখা হবে।
৭. দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষের ভিড়ে এই পৃথিবী ভরে উঠবে। ছল-চাতুরির দ্বারা ক্ষমতা দেখিয়ে সমাজের যে কোনও স্তরের মানুষ রাজনৈতিক প্রতিপত্তি লাভ করতে পারে।
৮. খরা, মহামারীর প্রকোপে জর্জরিত হবে সাধারণ মানুষ। তার সঙ্গে বেড়ে চলা করের বোজায় গরীব মানুষের খাবার জোগানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। কখনও অত্যধিক গরম, কখনও অনাবৃষ্টি বা অতিবৃষ্টিতে জীবন বিপন্ন হবে মানুষের।
৯. কলিযুগে নিজের বৃদ্ধ বাবা-মার দায়িত্ব অস্বীকার করবে সন্তান।
১০. সামান্য কয়েকটা টাকা বা খুব ছোটখাটো কারণে মানুষ মানুষের প্রাণ নিতে দ্বিধাবোধ করবে না। সামান্য স্বার্থে ঘা লাগলে, সব পুরনো সম্পর্ক ভুলে মানুষ নিজের অতি আত্মীয়েরও চরম ক্ষতি করতে উদ্যত হবে।

কলিযুগের বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?
১. মানুষ হবে তমোগুন প্রধান।
২. মানুষের ক্ষুদ্র যশ আশা প্রবল হবে।
৩. স
ও ধর্মপ্রাণ মানুষ হবে ধনহীন।
৪. অসতী রমনীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
৫. নগরী হবে পাষন্ডে দূষিত।
৬. ব্রাহ্মণ হবে কামনাক্ত ও অধিক আহারী।
৭. মানুষ হবে কটুভাষী।
৮. বনিক হবে ছলনাকারী।
৯. তষ্করগন হবে সাহসী।
১০. সন্ন্যাসীগন হবে লোভী।
১১. নারীগন হবে খর্বাকায় ও লজ্জাহীন।
১২. ব্রহ্মচারীগন হবে শুচিহীন।
১৩. তপস্বীগণ নগরে থাকবে।
১৪. সর্বোত্তম স্বামী নির্ধন হলে ভৃত্যগণ ত্যাগ করবে।
১৫. দরিদ্র হইয়াও রমণী আসক্ত হবে।
১৬. সর্বদা ভার্যাসহ মন্ত্রনা করবে।
১৭. শূদ্রগন তপস্বী হবে বেশি।
১৮. অধার্মিকগন তপাসনে বসবে ও ধর্মের কথা বলবে।
১৯. তুচ্ছ ধন নিয়ে বিবাহ করবে।
২০. নিজের প্রিয় প্রান ত্যাগ করে আত্মীয় স্বজনের নাশ ঘটাবে।

কলি যুগের মানুষের যে কি অবস্থা, সেই সম্বন্ধে শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে-
প্রায়েণাল্পায়ুষঃ সভ্য কলাবস্মিন্ যুগে জনাঃ।
মন্দাঃ সুমন্দমতয়ো মন্দভাগ্য হ্যপদ্রুতাঃ।
অনুবাদঃ
“হে মহাজ্ঞানী! এই কলিযুগের মানুষেরা প্রায় সকলেই অল্পায়ু। তারা কলহপ্রিয়, অলস, মন্দগতি, ভাগ্যহীন এবং সর্বোপরি তারা নিরন্তর রোগ আদির দ্বারা উপদ্রুত।”
তাহলে একটু চিন্তা করে দেখুন, আমাদের সত্যি আয়ু কম, কলহ প্রিয়, ঝগড়া পছন্দ করি! ঝগড়া লাগাতে সেটা আরো ভালো পারি! আমরা সকল কর্মে অলস, মন্দগতি আমাদের, ভাগ্য সত্য খারাপ। লক্ষীদেবীর কৃপা হতে বঞ্চিত আর বিভিন্ন রোগে আমরা জর্জরিত।আর এগুলো হতে বাঁচতে চাইলে, চার সম্প্রদায় ভুক্ত কোন গুরুদেবের চরণাশ্রিত হয়ে, গুরু প্রদত্ত আদেশ, নিয়ম নিষ্ঠা ও সদা হরিনাম করতে হবে। তাতেই সর্ব মঙ্গল হবে।


প্রজি কুমার রায় এম.এ.এল.এল.বি
বীর মুক্তিযোদ্ধা
সহকারী পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি (অবঃ)
সাবেক কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালায়।
ম্যানেজার, এক্সটার্নাল এফেয়ার্স
এসএসডি-টেকনোলজি
কার্নিভাল ইন্টারনেট।
সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি, মহানগর কমিটি, ঢাকা ও
নির্বাহী সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

রেস্টুরেন্ট_HD